শেরপুর থেকে মোঃ সাইদুর রহমান আপন।
শেরপুর জেলার সদর থানাধীন চান্দেরনগর গেরামারা এলাকায় চাঞ্চল্যকর শাহাজামাল হত্যা মামলার প্রধান আসামীকে ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া থানাধীন চান্দামিয়া এলাকা হতে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্প।
বাংলাদেশ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রান্তিলগ্নে “*বাংলাদেশ আমার অহংকার*” এই শ্লোগান নিয়ে জন্ম হয় র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১৪) এর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে র্যাব বাংলাদেশের মানুষের কাছে আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক। বিভিন্ন ধরনের চাঞ্চল্যকর অপরাধের স্বরূপ উৎঘাটন করে অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার কারণেই এই প্রতিষ্ঠান মানুষের কাছে আস্থা ও নিরাপত্তার অন্য নাম হিসেবে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেছে। র্যাব তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাস, মাদক, অস্ত্র, অপহরণ, মানব-পাচার, হত্যাসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থানে থেকে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে; যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণ কর্তৃক ইতোমধ্যেই বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
বাদী মোঃ চাঁন মিয়া (৫৫), পিতা-ছুরমাহমুদ, সাং-চান্দেরনগর গেরামারা, থানা-সদর, জেলা- শেরপুর। বিবাদী মোঃ মিয়ার উদ্দিন (৪০), পিতা-মোঃ মুন্তা ফারাজি, সাং-চান্দেরনগর গেরামারা, থানা ও জেলা-শেরপুর। বাদী ও বিবাদী পরস্পর আত্মীয় স্বজন ও পাশাপাশি বাড়ীতে বসবাস করে। বিবাদীর সহিত বাড়ীর সীমানা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। বিগত ১০/১৫ দিন পূর্বে বাদী বাড়ীর সীমানায় কয়েকটি সুপারী গাছের চারা রোপন করেন। গত ০৪/০৭/২০২৩ ইং তারিখ সকাল অনুমান ০৬:০০ ঘটিকার সময় আসামী সুপারী গাছের চারা উঠাইতে বলে। বাদী আসামীকে জমি মাপার কথা বলেন এবং জমি পাইলে তাকে নিতে বলেন। উক্ত কথা শুনে আসামী উত্তেজিত হয়ে গালমন্দ করিতে থাকে। উক্ত ঘটনায় আসামী সুযোজ খুঁজতে থাকে তাদের ক্ষতি করার জন্য। ঐদিন সকাল ০৭:০০ ঘটিকার সময় বাদীর ছেলে শাহাজামাল (৩০) তাদের পালিত একটি গরুকে গোয়াল ঘর থেকে বাহির করে বাড়ীর সামনে জনৈক নূর ইসলামের পতিত জমিতে নিয়ে ঘাস খাওয়ার জন্য বাধিয়া রাখতে যায়। এমতাবস্থায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে গত ০৪/০৭/২০২৩ ইং তারিখ সকাল অনুমান ০৭:৩০ ঘটিকার সময় আসামী ধারালো দা দিয়ে ভিকটিম শাহাজামালকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার পিছনের অংশে স্বজোরে আঘাত করে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম করে এবং অন্যান্যা আসামীগণ তাদের হাতে থাকা লাঠি, লোহার রড, ইত্যাদি দ্বারা ভিকটিমকে এলোপাথারী আঘাত করতে থাকে। ইতিমধ্যে ডাকচিৎকার করিতে থাকলে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে আসামী দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় শাহাজামালকে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি ঘটলে চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। রেফার্ড মতে তাকে নিয়ে এ্যাম্বুলেন্স যোগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে শেরপুর থানাধীন শিমুতলী মোড়ে পৌছামাত্র গত ০৪/০৭/২০২৩ ইং তারিখ অনুমান ১১:০০ ঘটিকার সময় মৃত্যুবরণ করেন। উক্ত ঘটনা নিয়ে ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে অভিযোগ দাখিল করলে অফিসার-ইন-চার্জ, শেরপুর জেলার সদর থানার মামলা নং-১৪/৩৮১, তারিখঃ ০৪/০৭/২০২৩ ইং, ধারা-১৪৩/৩২৩/৩০৭/৩০২/১১৪/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০ একটি হত্যা মামলা রুজু করেন।
উক্ত ঘটনার পর র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্পের প্রতিনিধি উক্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ছায়া তদন্ত শুরু করে আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত রাখে। এরই সূত্র ধরে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান, সিপিসি-১, জামালপুর এর নেতৃত্বে এবং উপ-পরিচালক মোঃ আনোয়ার হোসেন, ব্যাটালিয়ন সদর, ময়মনসিংহ এর উপস্থিতিতে র্যাবের একটি যৌথ অভিযানিক দল অদ্য ২৩/১০/২০২৩ ইং তারিখ অনুমান ০১:৩০ ঘটিকার সময় ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া থানাধীন চান্দামিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ মিয়ার উদ্দিন (৪০)কে আটক করতে সক্ষম হয়।
আটককৃত আসামীকে শেরপুর জেলার সদর থানায় সূত্রোক্ত মামলা মোতাবেক মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।