কুমিল্লা এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনে (ইপিজেড) বকেয়া বেতন–ভাতা পরিশোধ ও কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার দাবিতে নাসা গ্রুপের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। দীর্ঘদিনের পাওনা আদায়ে অনিশ্চয়তা ও অস্পষ্ট নোটিশকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের ক্ষোভ চরমে পৌঁছায়।
রবিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে কুমিল্লা ইপিজেডের ১ নম্বর ফটকের সামনে নাসা স্পিনিং লিমিটেড, নাসা স্পিনারসসহ নাসা গ্রুপের একাধিক প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা জড়ো হতে থাকেন। সকাল সাড়ে ৭টায় তাদের সমাবেশ শুরু হয় এবং সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে শ্রমিকরা মানববন্ধন করেন। এরপর ধীরে ধীরে তা বিক্ষোভ মিছিলে রূপ নেয়।
শ্রমিকদের অভিযোগ, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিষ্ঠানগুলো ‘বন্ধ’ ঘোষণা করা হলেও এপ্রিল থেকেই উৎপাদন ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। এতে বহু শ্রমিকের কয়েক মাসের বেতন–ভাতা বকেয়া থেকে যায়। তাদের দাবি— একাধিকবার সময় নিলেও মালিকপক্ষ পাওনা পরিশোধের বিষয়ে কোনো নিশ্চিত সিদ্ধান্ত দেয়নি।
গত ২৯ নভেম্বর নাসা গ্রুপের পক্ষ থেকে নতুন একটি নোটিশ দেওয়া হলে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ আরও বাড়ে। কারণ, ওই নোটিশে বকেয়া পরিশোধের নির্দিষ্ট তারিখ বা নিশ্চয়তা ছিল না বলে দাবি শ্রমিকদের।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক শ্রমিক বলেন, “বেতন পাইনি বহুদিন। ঘরে খাবার নেই, বাচ্চারা না খেয়ে আছে। নাসা গ্রুপের মালিক আসুক, সমাধান দিক। বেপজা শুধু শান্তনার কথা বলে।”
আরেকজন বলেন, “ঘর ভাড়া দিতেও পারছি না। পাওনা না পেলে ঘরে ফিরব না।”
বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে দুপুর পর্যন্ত কঠোর নিরাপত্তা ছিল ইপিজেড এলাকায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বেপজা কর্মকর্তা ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত থাকে এবং কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের উদ্দেশে বেপজার জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মাহবুব বলেন, “শ্রমিকদের দাবি আমরা বুঝি। দ্রুত সমাধানের জন্য কাজ চলছে।”
নাসা গ্রুপের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মেজর আব্দুল হাফিজ জানান, “৩০ নভেম্বর বেতন–ভাতা দেওয়ার কথা ছিল, তবে কোম্পানি বর্তমানে বড় চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। শ্রমিকরা যে ধৈর্য দেখাচ্ছেন, তা আমরা মূল্য দেই।”
ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচিতে শ্রমিকদের একটাই স্লোগান— “বকেয়া পরিশোধ নিশ্চিত করলেই ঘরে ফিরব।”
তারা সরকার, বেপজা ও নাসা গ্রুপের মালিকপক্ষের প্রতি দ্রুত কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান।
মন্তব্য করুন