প্রতিবেদন কালের বার্তাঃ
বাংলাদেশের শেখ হাসিনার সরকার দুর্বল হলে তা ভারত এবং আমেরিকা কারো জন্যই সুখকর হবে না বলে মনে করে নয়াদিল্লি। ভারতের কূটনৈতিক সূত্রের খবরে জানা যায়, একাধিক স্তরের বৈঠকের জন্য বাইডেন প্রশাসনকে একথা জানিয়েছে দেশটি। বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আমেরিকার বর্তমান ভূমিকায় ভারত যে খুশি নয় ওয়াশিংটনকে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সেই বার্তাও। দেশটির আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয় নয়াদিল্লি বলছে ওয়াশিংটনের মত ভারতও চায় বাংলাদেশে সুষ্ঠ ও অবাধ নির্বাচন হোক কিন্তু যেভাবে হাসিনা সরকারকে অস্থির করার জন্য আমেরিকার পক্ষ থেকে নানারকম পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে তার প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ইতিবাচক নয়।
এ দিকে আর তিন সপ্তাহ পরেই নয়াদিল্লিতে একমঞ্চে বসবেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে ভারতের এই বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। এছাড়া সাউথ ব্লক মনে করে জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিক ছাড় দেওয়া হলে অদূর ভবিষ্যতে ঢাকা মৌলবাদের দখলে চলে যাবে, উদার পরিবেশ যেটুকু রয়েছে তাও আর থাকবেনা। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে ভারতের সঙ্গে দীর্ঘতম স্থলসীমান্ত রয়েছে বাংলাদেশের ফলে বাংলাদেশের যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি ভারতীয় প্রভাব ফেলে। দেশের কূটনৈতিক সূত্র জানায় নয়াদিল্লি একথাই বাইরের প্রশাসনকে জানিয়েছে জামায়াতকে আস্কারা দিলে একদিকে যেমন ভারতের আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস বাড়তে পারে তেমনি চীনের প্রভাব বাংলাদেশে অনেকটাই বেড়ে যাবে যা ওয়াশিংটনের কাঙ্ক্ষিত নয়।
মনে করা হচ্ছে আমেরিকা জামায়াতকে বরাবর রাজনৈতিক ইসলামিক সংগঠন হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করে।দলটিকে মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে তুলনা করে আমেরিকা কিন্তু বাস্তবে জামায়াত উগ্র মৌলবাদী সংগঠন এবং পাকিস্তানের খুব ঘনিষ্ঠ এ বিষয়ে কোনো সংশয় নেই নয়াদিল্লির। শুধুমাত্র বাংলাদেশের জন্য আলাদা করে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি ঘোষণা আদৌ উচিত বলে মনে করছেনা নয়াদিল্লি। এই ভিসানীতি নিয়মে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন যারা বানচাল করার চেষ্টা করবে তারা আমেরিকায় প্রবেশের অধিকার পাবে না। এ বিষয়ে ভারতের কূটনীতিকরা বলছেন আমেরিকার প্রশাসন সরাসরি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলাতেই নিজেদের দেশের আইন প্রয়োগ করে বাংলাদেশের জন্য আলাদা ভিসানীতি তৈরি করেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল নয়া দিল্লি এসে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব তথা কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করে গেছেন। সেখানে তারাও বার্তা দিয়েছেন আঞ্চলিক স্থিতি বজায় রাখার প্রশ্নে বিএনপি-জামায়াত জোট বিপদজনক। প্রতিনিধি দলের নেতা বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এর সঙ্গে একটি ইতিবাচক বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকের ঠিক পরেই কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক জানান আমরা ভারতকে বলেছি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার উভয় রাষ্ট্রের জন্য জরুরি। শেখ হাসিনা সরকার এ ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ যে বাংলাদেশের মাটিকে ভারত বিরোধী কার্যকলাপে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে।
